উপমহাদেশে অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষার প্রবক্তা এবং চট্টগ্রাম পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ চেয়ারম্যানের ৬১ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে কবর জেয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে মরহুমের কবর জেয়ারত ও পুষ্পমাল্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। এসময় নূর আহমদ চেয়ারম্যানের অবদানকে তরুণ প্রজন্মের কাছে চিরস্মরণীয় করে রাখতে নগরীতে তার নামে গোলচত্ত্বর করার ঘোষণা দেন মেয়র।
কবর জেয়ারত শেষে চসিক সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, নূর আহমদ চেয়ারম্যান ৩৩ বছর পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে পৌরসভার এক নবদিগন্তের সূচনা করেছিলেন। মরহুম নূর আহমদ চেয়ারম্যান অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তনে যে অবদান রেখেছেন তা স্মরণীয়। তিনি চট্টগ্রামবাসীসহ সারাদেশে সমাজ সংস্কারে যে অবদানগুলো রেখে গেছেন তার সুফল আমরা এখনো ভোগ করে যাচ্ছি। তিনি দেশের সমাজ সংস্কারে অনেক অবদান রেখেছেন। আজকের রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাকর্মীদের জন্য এসব শিক্ষণীয় বিষয়।
শিক্ষায় মান বৃদ্ধির আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, গত ১৬ বছরে দেশে শিক্ষার হার কাগজে-কলমে বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষার মান বাড়েনি। যে কারণে বিপুল পরিমাণ উচ্চশিক্ষিত তরুণ বেকারত্বে ভুগছে। এজন্য শিক্ষার মান বাড়াতে হবে, বিনিয়োগ বাড়াতে হবে কর্মমুখী শিক্ষায়। পাশাপাশি বিদেশে যে প্রবাসীরা যাচ্ছে তাদেরও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।
নগরীর শিক্ষাখাতকে ঢেলে সাজাতে সব ধরনের সহযোগিতার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশনগুলোর মধ্যে একমাত্র চসিকই শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে থাকে। বর্তমানে ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করছে চসিক।
“এক্ষেত্রে প্রতি বছর যে ভর্তুকি দিতে হয় সেটিকে আমি ব্যয় মনে না করে বিনিয়োগ মনে করি। কারণ শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে তারা ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম ও সর্বোপরি দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। এজন্য মেয়র হিসেবে আমি শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখব। শিক্ষা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে বিনিয়োগ করলে একটি আলোকিত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। প্রতি মাসে চসিককে ছয় থেকে আট কোটি টাকা শিক্ষা খাতে ব্যয় করতে হয়, যা আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ। এটি শুধুমাত্র ভোটের বিষয় নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ।”
আলোচনা সভায় নূর আহমদ চেয়ারম্যানের অবদানের উপর স্মৃতিচারণ করেন এস তার দৌহিত্র এস এম সালাউদ্দীন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা,নূর আহমদের দৌহিত্র এস এম নাসিরুদ্দিন আল মামুনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর প্রধান শিক্ষক ও চসিকের কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ।